সিটি ব্যাংকের অংশীদার হলো আইএফসি

সিটি ব্যাংকের অংশীদার হলো আইএফসি

বেসরকারি খাতের দি সিটি ব্যাংকের মালিকানায় আসার অনুমোদন পেয়েছে বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। এর ফলে আইএফসির পক্ষে দুজন পরিচালক সিটি ব্যাংকের পরিচালক হবেন। তাঁরা ব্যাংকটিকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে সহায়তা করবেন বলে আশা করছেন সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক চিঠিতে সিটি ব্যাংককে সংঘবিধিতে সংশোধনের অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি বা সংস্থা দেশীয় কোনো ব্যাংকের পর্ষদে থাকার সুযোগ পেল বলে জানা গেছে।
সিটি ব্যাংকের ৫ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করে আইএফসি। ১৩১ কোটি টাকায় শেয়ার কেনার চুক্তি হয়। চুক্তির শর্ত মানতে গিয়ে ব্যাংকটি সংঘবিধির ৫০-এর বেশি ধারা সংশোধন করে। অবশেষে গতকাল তার অনুমোদন মেলে।
সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশরুর আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে থাকার সুযোগ পেয়েছি, এ জন্য সিটি ব্যাংক পরিবার আনন্দিত। এর ফলে সিটি ব্যাংকে আন্তর্জাতিক মানের ব্যাংকিং চর্চা হবে। ব্যাংকটির পরিচালনা ব্যবস্থাপনাও উন্নত হবে। আমরা বিশ্বাস করি পরিচালনা পর্ষদে বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি সিটি ব্যাংককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’
চুক্তি অনুযায়ী, ব্যাংকটির ইস্যুকৃত নতুন ৫ শতাংশ শেয়ার কিনবে আইএফসি। ২৮ টাকা ৩০ পয়সা হিসাবে ১৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় এ শেয়ার কেনা হবে। ব্যাংকটির ৪ কোটি ৬৫ লাখ শেয়ার পাবে আইএফসি। এর মধ্যে ১০ টাকা অভিহিত মূল্য ও ১৮ টাকা ৩০ পয়সা প্রিমিয়াম বা অধিমূল্য। এতে সিটি ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে মুনাফা হয়েছে ১৮ টাকা ৩০ পয়সা। ৫ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে আইএফসির দুজন পরিচালক থাকবেন সিটি ব্যাংকে। এ ছাড়া সিটি ব্যাংককে ৩ বছর মেয়াদে ২ কোটি ডলার (১৬০ কোটি টাকা) ইক্যুইটিতে রূপান্তরযোগ্য ঋণ দেবে আইএফসি।
জানা গেছে, শেয়ার কেনার শর্ত হিসেবে আইএফসির পক্ষ থেকে ব্যাংকটির সংঘবিধিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ জন্য গত বছরের ২৭ মার্চ ও ৩১ মে বিশেষ সাধারণ সভার আয়োজন করে ব্যাংকটি, যাতে এসব সংশোধনী ও শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদন করেন শেয়ারহোল্ডাররা। ব্যাংকটি শেয়ার হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কোম্পানির (বিএসইসি) কাছে আবেদন করলে তাতে অনুমোদন পায়। তবে বিএসইসি এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেয়। সিটি ব্যাংক শেয়ার হস্তান্তর ও সংঘবিধি পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উভয় আবেদনই সে সময় নাকচ করে দেয়।
সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের ফলে এক মাসের মধ্যেই শেয়ার হস্তান্তর ও পরিচালক নিয়োগ সম্পন্ন হবে। বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর দুজন প্রতিনিধি পরিচালনা পর্ষদে থাকলে কোনো ধরনের অনিয়ম হওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এর ফলে ব্যাংকটি শিগগির আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে। পাশাপাশি কম সুদে ঋণ সুবিধাও মিলবে আইএফসি থেকে।
আইএফসি মালিকানায় আশার খবরে গত এক মাসে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম বাড়ছে। ১ মার্চ সিটি ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা। গতকাল দিন শেষে তা বেড়ে হয় ৪১ টাকা ৪০ পয়সা। গতকাল এক দিনেই বেড়েছে ২ টাকা ৪০ পয়সা।

Comments

Popular posts from this blog

হস্তমৈথুনের ফলে কতো ক্যালোরী খরচ হয় ?