সরকারি ওষুধ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২


সরকারি ওষুধ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২

নেত্রকোনায় সরকারি ওষুধ পাচারের সময় দুই ব্যক্তিকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে আটক করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আজ বুধবার সকালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া গ্রামের আবদুল মোতালেব (৩২) ও ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামে রফিকুল ইসলাম (২৮)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ গতকাল রাত নয়টার দিকে শহরের কাটলি এলাকায় মোতালিবের ভাড়া করা বাসায় অভিযান চালায়। এ সময় তিনি ওষুধভর্তি একটি প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে শ্যামগঞ্জ বাজারের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হচ্ছিলেন। পরে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও কিছু ওষুধ জব্দ করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ বাজার থেকে রফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়।
পুলিশের ভাষ্য, জিজ্ঞাসাবাদে দুজন দাবি করেন, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ওষুধাগারের দায়িত্বরত স্টোরকিপার মো. মশিউর রহমান ও পূর্বধলা হাসপাতালের স্টোরকিপার মো. আবুল কালামের যোগসাজশে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ওষুধ বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করছেন। এরপর প্রত্যন্ত অঞ্চলের ওষুধের দোকানে এগুলো বিক্রি হয়। আবার বেশি ওষুধ হলে ঢাকায় পাঠিয়ে মেশিনের সাহায্যে সরকারি সিল তুলে ফেলা হয়।
জব্দ করা ওষুধগুলোর মধ্যে দুই হাজার পিচ সিপ্রোসিন ৫০০ মি.গ্রা., ২ হাজার ৫০০টি এজিথ্রোমাইসিন, ৩ হাজার ৫০০টি এমোকসিলিন ও ৩ হাজার ৫০০টি পেন্টোপ্রাজল রয়েছে। এগুলোর দাম দুই লাখ টাকার মতো হবে বলে পুলিশের ধারণা।
এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শরিফুল হক বাদী হয়ে আজ সকালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজন জানিয়েছেন, তাঁরা ওষুধগুলো জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্টোরকিপার মশিউরের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন। এর পেছনে একটি বড় চক্র জড়িত রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাঁদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। এই স্টোর থেকে ইউনিয়ন থেকে শুরু করে উপজেলার হাসপাতালগুলোতে ওষুধ সরবরাহ করা হয় সবার সামনেই। আর কাটলি এলাকার যে লোকটি ধরা পড়েছে, সে তো ভাঙারির ব্যবসা করে। হাসপাতাল থেকেও স্যালাইনের পরিত্যক্ত ব্যাগ ইত্যাদি টুকিয়ে নিয়ে যায়।’
পূর্বধলা হাসপাতালে ওষুধের স্টোরের দায়িত্বে থাকা আবুল কালামের মোবাইল বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। এটি সিএস অফিসের বিষয়। আমার স্টোরের ওষুধ ঠিক আছে।’

জেলা সিভিল সার্জন আবদুল গণির মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে ডেপুটি সিভিল সার্জন নীলোৎপল তালুকদার বলেন, হাসপাতালের সরকারি ওষুধ চোরাকারবারের চক্রে সিএস কার্যালয়ের কেউ জড়িত থাকলে ও তা প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

Popular posts from this blog

হস্তমৈথুনের ফলে কতো ক্যালোরী খরচ হয় ?

সাক্ষাৎকার : হাসান আজিজুল হক ‘আমি আমার শেষ নিয়ে ভাবছি না’