এবার তিন সাংবাদিককে পেটালেন তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান

এবার তিন সাংবাদিককে পেটালেন তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান
বরগুনার তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে এবার পুলিশের সামনে তিন সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
মনিরুজ্জামান এর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ও সরকারি কর্মচারীকে মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অন্তত চারজন প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ছিল উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের দিন। এ উপলক্ষে দুপুর পৌনে ১২টায় উপজেলা পরিষদের তৃতীয় তলায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী মিছিল করছিলেন। মিছিলে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বেসরকারি এসএ টিভির বরগুনা প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান ফারুক মিছিলের দৃশ্য ধারণ করতে যান। প্রথমে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী তাঁকে বাধা দেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান এসে সাংবাদিক নুরুজ্জামানকে গালাগাল করেন। একপর্যায়ে চড় ও কিল-ঘুষি মারেন। নুরুজ্জামান দৌড়ে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় পুলিশ সদস্যদের সামনে আশ্রয় নেন। মনিরুজ্জামান ধাওয়া দিয়ে সেখানে দ্বিতীয় দফায় নুরুজ্জামানকে মারধর করেন। বরিশালের আঞ্চলিক পত্রিকার দুই প্রতিনিধি মিজানুর রহমান ও খাইরুল ইসলাম এগিয়ে গেলে চেয়ারম্যান তাঁদেরও মারধর করেন। এ সময় এসএ টিভির সাংবাদিকের হাত থেকে ভিডিও ক্যামেরা কেড়ে নেন তিনি।
সাংবাদিক নুরুজ্জামানও প্রথম আলোকে একই কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নৌকা প্রতীকের স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্কাস মৃধার বিরুদ্ধে অশ্লীল স্লোগান দিচ্ছিলেন। আক্কাস মৃধার স্ত্রী শেফালি বেগম উপজেলার ছোট বগী ইউপিতে বিএনপি-সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী। ওই ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান। তিনি তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানের ছোট ভাই।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি জাকির হোসেন তিন সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান কথায় কথায় মানুষকে মারধর করেন। তিনি এর বিচার দাবি করেন।
তবে সাংবাদিক মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অন্য লোকজন তাঁকে মারধর করছিল। আমি তাঁকে রক্ষা করেছি। আর ক্যামেরাটি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সেটি নিয়ে তালতলী থানার এক উপপরিদর্শকের কাছে জমা দিয়েছি।’
জানতে চাইলে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। ঘটনার সময় আমাদের একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুলিশই ওই সাংবাদিককে রক্ষা করেছে।’

Comments

Popular posts from this blog

হস্তমৈথুনের ফলে কতো ক্যালোরী খরচ হয় ?

সাক্ষাৎকার : হাসান আজিজুল হক ‘আমি আমার শেষ নিয়ে ভাবছি না’