চুরি যাওয়া শিশুটি ফিরল মায়ের কোলে
- Get link
- X
- Other Apps
চুরি যাওয়া শিশুটি ফিরল মায়ের কোলে
মায়ের কাছে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং বগুড়া পুলিশ যৌথভাবে বেলা সাড়ে তিনটায় সংবাদ সম্মেলন করে নবজাতক চুরি এবং উদ্ধারের নেপথ্যের ঘটনা তুলে ধরে।
পুলিশ ও হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের জমাদার সরদার রমজান আলীর বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী গ্রামে। আজ সকালে তাঁর মোবাইলে অচেনা একটি নম্বর থেকে ফোন আসে। এই ফোনের সূত্র ধরেই পুলিশ চুরি যাওয়া নবজাতক উদ্ধারের তৎপরতা শুরু করে।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রমজান আলীর কাছ থেকে খবর শুনে তাৎক্ষণিক বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীকে বিষয়টি জানাই।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারে তাৎক্ষণিক ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন কুমার কুণ্ডুকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ঢেকুরিয়া বাজারে পাঠাই। তিনি প্রথমে বাজারের প্রসাধন ব্যবসায়ী বকুল মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এসআই খোকন কুণ্ডু বলেন, বকুলকে আটকের পর হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির আদ্যোপান্ত বেরিয়ে আসে। তিনি বলেন, ‘শিশুটি গাবতলী উপজেলার মাঝবাড়ি গ্রামের নিঃসন্তান দম্পতি লাবনী বেগম ও ফুল মিয়ার কাছে রয়েছে। বকুলকে সঙ্গে নিয়ে তাৎক্ষণিক ফুল মিয়ার বাড়িতে যাই। কিন্তু এর আগেই সটকে পড়ে ওই দম্পতি। বাড়ির বারান্দায় মাটিতে শুইয়ে রাখা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, ফুল মিয়ার বাড়ি মাঝবাড়ি হলেও শ্বশুরবাড়ি কাজিপুরের ঢেকুরিয়া গ্রামে। বকুলকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে, শনিবার হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে চুরি করেন বগুড়া শহরতলির বারপুর এলাকার রত্না বেগম। চুরির পরপরই তিনি শিশুটিকে ঢেকুরিয়া গ্রামে গিয়ে ওই দম্পতির কাছে পৌঁছে দেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, শিশুটিকে জীবন্ত উদ্ধার ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এ কারণে চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের আগে শিশুটিকে তাঁর মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়াটাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এখন চুরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা চালানো হবে।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বিধান চন্দ্র মজুমদার এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে হারানো নবজাতককে বুকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা হোসনে আরা বেগম ও বাবা রুবেল হোসেন।
মা হোসনে আরা বলেন, ‘বুকের নাড়িছেঁড়া ধনকে হারিয়ে শোকে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। মুখে কিছুই দিইনি। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। হারানো বুকের ধন ফিরে পাব—এটা কখনো ভাবিনি। ওকে ফিরে পেয়ে বুকটায় শান্তি লাগছে। খুব ভালো লাগছে।’
গত শনিবার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হোসনে আরার সঙ্গে আসা তাঁর মা রেহেনা বেগমের সঙ্গে ভাব জমিয়ে কৌশলে তিন দিন বয়সী নবজাতকটিকে চুরি করে পালান এক নারী।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment