র্যাবের নির্যাতনের বিবরণ সুইডিশ রেডিওতে
- Get link
- X
- Other Apps
র্যাবের নির্যাতনের বিবরণ সুইডিশ রেডিওতে
‘ক্রসফায়ারের’ নামে র্যাব আসলে কী করছে, সে সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রচার করেছে সুইডিশ রেডিও। প্রতিবেদনটির শিরোনাম, গুপ্তহত্যার কথা স্বীকার করেছে র্যাব। প্রায় নয় মিনিটের ওই প্রতিবেদনে এক ব্যক্তিকে বাংলা ভাষায় হত্যা ও নির্যাতনের বিবরণ দিতে শোনা যাচ্ছে। রেডিওটি বলেছে, বিবরণ দেওয়া এই ব্যক্তি র্যাবের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার অজান্তে অডিওটি রেকর্ড করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে তাঁর নামও আড়াল করা হয়।
২০০৪ সালে পুলিশের অভিজাত ইউনিট হিসেবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) যাত্রা শুরুর পর থেকে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে অপহরণ, গুম, গুপ্তহত্যা ও ‘ক্রসফায়ারের’ অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে লেখালেখি হয়েছে। দেশি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে সরকার এবং র্যাব সব সময় এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সুইডিশ রেডিওর হাতে থাকা দুই ঘণ্টার সাক্ষাৎকারটি শোনার পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পুরো ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে। এসব ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘র্যাব আইনবহির্ভূতভাবে কিছু করে না। ক্রসফায়ারে এখন পর্যন্ত যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁরা সশস্ত্র, কুখ্যাত সন্ত্রাসী, ডাকাত ও জঙ্গি। ওঁদেরকে ধরার জন্য যখন অভিযান চালানো হয়, তখন তাঁরা র্যাবের ওপর গুলি ছোড়েন। তখন র্যাবকেও গুলি ছুড়তে হয়।’ তিনি আরও বলেন, শুধু র্যাবের গুলিতেই সন্ত্রাসীরা নিহত হয়েছেন—ব্যাপারটা তেমন নয়, র্যাবের কর্মকর্তা ও সদস্যরা নিহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
সুইডিশ রেডিওর প্রতিবেদনে র্যাবের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি বলেন, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি তাঁদের নির্দেশনা হলো, ‘যদি ধরতে পারো—সে যেখানেই থাকুক, তাকে গুলি করে মারবে, তারপর পাশে একটা অস্ত্র রেখে দেবে।’
সাধারণত যাঁরা সন্দেহভাজন অপরাধী, যাঁদের বিরুদ্ধে বিচার দ্রুত করা যাবে না বা যাঁদের পুনর্বাসন অসম্ভব, তাঁদেরই তুলে এনে ‘ক্রসফায়ার’ করা হয়। এই তালিকায় সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও থাকেন কখনো কখনো। তিনি বলেন, ঘুষের টাকা দিয়ে তাঁরা অস্ত্র কেনেন এবং যাঁদের হত্যা করা হয়, তাঁদের মৃতদেহের পাশে সেই অস্ত্র ফেলে আসেন। এতে করে এমন একটা ধারণা দেওয়া হয় যে তাঁরা আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছুড়েছেন।
রেডিওর প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উলফ ব্লমকভিস্ট বাংলাদেশে র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল উল্লেখ করে বলেন, ‘এই বিপজ্জনক পর্যায়ের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কেউ এত স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা গলায় কথা বলতে পারে, তা ভাবলেই গা শিউরে উঠছে। আমরা নিজেরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছি না। তবে এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, কয়েক বছর ধরে তাঁরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ পেয়েছেন, সেগুলোর সঙ্গে এই বর্ণনা মিলে যায়।
র্যাবের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, র্যাবের সবাই গুম করায় বিশেষ পারদর্শী। হত্যাকাণ্ডের কোনো চিহ্ন যেন না থাকে সে বিষয়ে তাঁরা খুব তৎপর থাকেন। পরিচয়পত্র যেন পড়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখেন। এ ছাড়া হাতে দস্তানা ও জুতা ঢেকে নেওয়া হয়, যেন ঘটনাস্থলে পায়ের ছাপ না থাকে। অভিযানের সময় তাঁরা ধূমপানও করেন না বলে উল্লেখ করেন। সুইডিশ রেডিও যে ওই কর্মকর্তার বক্তব্য রেকর্ড করেছে, তা তিনি জানতেন না। ফলে তিনি মন খুলে নির্যাতনের গল্পও করেছেন।
র্যাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে তিনি বলেন, একটি বাহিনী এভাবে চলতে পারে না। তিনি বলেন, আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে মানবাধিকার কমিশন অভিযোগ তদন্ত করতে পারছে না। তবে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে তাঁরা নিজেরা তথ্যানুসন্ধান করে সরকারের কাছে সুপারিশ করবেন।
২০০৪ সালে পুলিশের অভিজাত ইউনিট হিসেবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) যাত্রা শুরুর পর থেকে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে অপহরণ, গুম, গুপ্তহত্যা ও ‘ক্রসফায়ারের’ অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে লেখালেখি হয়েছে। দেশি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে সরকার এবং র্যাব সব সময় এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সুইডিশ রেডিওর হাতে থাকা দুই ঘণ্টার সাক্ষাৎকারটি শোনার পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পুরো ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে। এসব ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘র্যাব আইনবহির্ভূতভাবে কিছু করে না। ক্রসফায়ারে এখন পর্যন্ত যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁরা সশস্ত্র, কুখ্যাত সন্ত্রাসী, ডাকাত ও জঙ্গি। ওঁদেরকে ধরার জন্য যখন অভিযান চালানো হয়, তখন তাঁরা র্যাবের ওপর গুলি ছোড়েন। তখন র্যাবকেও গুলি ছুড়তে হয়।’ তিনি আরও বলেন, শুধু র্যাবের গুলিতেই সন্ত্রাসীরা নিহত হয়েছেন—ব্যাপারটা তেমন নয়, র্যাবের কর্মকর্তা ও সদস্যরা নিহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
সুইডিশ রেডিওর প্রতিবেদনে র্যাবের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি বলেন, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি তাঁদের নির্দেশনা হলো, ‘যদি ধরতে পারো—সে যেখানেই থাকুক, তাকে গুলি করে মারবে, তারপর পাশে একটা অস্ত্র রেখে দেবে।’
সাধারণত যাঁরা সন্দেহভাজন অপরাধী, যাঁদের বিরুদ্ধে বিচার দ্রুত করা যাবে না বা যাঁদের পুনর্বাসন অসম্ভব, তাঁদেরই তুলে এনে ‘ক্রসফায়ার’ করা হয়। এই তালিকায় সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও থাকেন কখনো কখনো। তিনি বলেন, ঘুষের টাকা দিয়ে তাঁরা অস্ত্র কেনেন এবং যাঁদের হত্যা করা হয়, তাঁদের মৃতদেহের পাশে সেই অস্ত্র ফেলে আসেন। এতে করে এমন একটা ধারণা দেওয়া হয় যে তাঁরা আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছুড়েছেন।
রেডিওর প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উলফ ব্লমকভিস্ট বাংলাদেশে র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল উল্লেখ করে বলেন, ‘এই বিপজ্জনক পর্যায়ের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কেউ এত স্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা গলায় কথা বলতে পারে, তা ভাবলেই গা শিউরে উঠছে। আমরা নিজেরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছি না। তবে এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, কয়েক বছর ধরে তাঁরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ পেয়েছেন, সেগুলোর সঙ্গে এই বর্ণনা মিলে যায়।
র্যাবের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, র্যাবের সবাই গুম করায় বিশেষ পারদর্শী। হত্যাকাণ্ডের কোনো চিহ্ন যেন না থাকে সে বিষয়ে তাঁরা খুব তৎপর থাকেন। পরিচয়পত্র যেন পড়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখেন। এ ছাড়া হাতে দস্তানা ও জুতা ঢেকে নেওয়া হয়, যেন ঘটনাস্থলে পায়ের ছাপ না থাকে। অভিযানের সময় তাঁরা ধূমপানও করেন না বলে উল্লেখ করেন। সুইডিশ রেডিও যে ওই কর্মকর্তার বক্তব্য রেকর্ড করেছে, তা তিনি জানতেন না। ফলে তিনি মন খুলে নির্যাতনের গল্পও করেছেন।
র্যাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে তিনি বলেন, একটি বাহিনী এভাবে চলতে পারে না। তিনি বলেন, আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে মানবাধিকার কমিশন অভিযোগ তদন্ত করতে পারছে না। তবে তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে তাঁরা নিজেরা তথ্যানুসন্ধান করে সরকারের কাছে সুপারিশ করবেন।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment